ছোটবেলার ছড়া ২
বিলের সত্য পরীক্ষা
বিলের বাবার বন্ধু যত আসেন হুঁকো খেতে,
তাই না দেখে বিলে বলে -
"একটা হুঁকোয় সবাই পারে না খেতে?"
আসলে তাদের বাড়ি তে ছিল ,
বহু হুঁকো সারে সারে,
একটা হুঁকোয় সবাই নাকি
তামাক খেতে নারে !
তাহলে নাকি জাত চলে যায়,
সবাই তারে একঘরে কয়।
বিলে ভাবে , জাত মানে কি?
এর মানে টা কেউ জানে কি ?
দেখবো আমি যাচাই করে,
কি করে লোক হয় একঘরে!
একদিন সে সব হুঁকো গুলো টেনে টেনে দেখে ,
কেউ বারণ করলে পরে বিলে কি গায়ে মাখে?
তাই না দেখে বিলের বাবা কহিলেন তায়-
" অপর জাতের হুঁকো খেলে
জাত যে চলে যায়"
বিলের ছিল যে ঝোঁক ছোটবেলা থেকে,
সব কিছু পরীক্ষা করে দেখা নিজে থেকে।
জাতি ধর্ম সবই মেকি, সব ই মোদের মন গড়়া,
জাতের নামে বজ্জাতি সব,
ঐক্য চাই তাই দেশ জোড়া,
শেষ করছি আমার ছড়া ।
এপ্রিল ফুল
এপ্রিল ফুল,এপ্রিল ফুল
ফুল হলে তো পাবে না কুল,
কবের থেকে আসছে চলে
এই প্রথার ই ধারা।
ফুল যারা করতে পারে বুদ্ধিমান তো তারা !
যাকে তুমি করছ ফুল
ফুল হবে যেই সে ,
তখন তুমি উঠবে বলে ,
"এপ্রিল ফুল , এপ্রিল ফুল,
ফুল হলে তো পাবে না কুল!
অনেক সময় কেটে গেল,
শেষ করি মোর ছড়া ,
এপ্রিল ফুল করা কিন্তু থাকবে বাধাধরা ।
বাংলার নববর্ষ
১৩০০ সন পাড়ি দিল স্বর্গ অভিমুখে
১৪০০ আজ পাতে রাজত্ব
পৃথিবীর এই বুকে ।
১৪০০ কে আমরা সবাই চলবো যে মানিয়া
১৩০০ আজ বিদায় নিলো স্মৃতিরেখা টানিয়া ।
১৩০০ কে পরবে মনে কাজের ফাঁকে ফাঁকে ,
১৪০০ যে থাকবে মোদের সবার পাছে পাছে ।
১৩০০ তে যা করেছি নাচ গান ছবি আঁকা ,
১৪০০ তেও চলতে হবে পথ যে আঁকবাকা।
১৩০০ কে বিদায় জানাই প্রনাম করি তাকে,
তার সঙ্গে জানাই প্রনাম আমার বাংলা মাকে ।
বর্ষা মুখর দিন
আজ বর্ষা মুখর দিন,
নদী নালা পুকুর খাল এক দেহে হোল লীন।
বাদলের ধারা ঝরে রিমঝিম,
বাতাস বইছে গা হিমহিম ।
বৃষ্টি তো আর ভালো লাগে না করবো চুন চুরি,
রান্নাঘরে রান্না হবে গরম খিচুড়ি ।
আকাশে আজ মেঘ জমেছে
হবে মেঘের খেলা,
সেই খেলাতে অংশ নিতে ভাসাই মেঘের ভেলা ।
পুজা
হই হই করে এলো আশ্বিন,
এলো নতুন দিন, ছুটির দিন,
দেবীর বাহন সিংহ নাড়ায় নতুন তেজে লেজ,
থাক না পুজোর এই কটা দিন শিউলি ঝরা আমেজ ।
হাওয়ায় ভাসে শিউলি ফুলের মন জুড়ানো ঘ্রান,
নতুন পুজোর নতুন সাজে উতলা হয় প্রান ।
চারিদিকে বাদ্যি বাজে তাক ধিন ধিন তাক,
শিউলি ফোটা পুজোর ঘ্রানে উপচে পরে নাক ।
পুজয় লভি নতুন জামা আত্মীয় দের কাছে ,
পোশাক পড়ার ইচ্ছে জাগে মনের মাঝে মাঝে ।
পুজোর কদিন কাটবে শুধু হাসি কান্নার খেলায়,
পুজোর সন্ধ্যে কাটবে শুধু শাড়ী জামার মেলায় ।
দশমীর দিন কাটবে শুধু অশ্রু ভেজা চোখে ,
পুজোর দিনের রেশ টি শুধু রইবে আমার বুকে ।
স্বর্নালী সন্ধ্যা
শত সহস্র স্বাগত জানাই মোদের গানে গানে ,
এই ক্ষুদ্র জলসা যেন হৃদয়ে ঢেউ আনে ।
আমন্ত্রনের মাঝে মোরা বিলাই ভালবাসা,
শ্রম বুঝি আজ সফল হবে এই যে মোদের আশা ।
মনের কথা জানিয়ে মোরা দিচ্ছি এবার ইতি ,
ইতির সাথে রইল মোদের শুভেচ্ছা আর প্রীতি ।
শীতের সাজ
আমলকী ডাল নৃত্য করে কোন হাওয়ার ই তালে?
কাল্পুরুশের তারকারা কোন আকাশে জ্বলে ?
এই কালেরে সবাই জানে,
নাম যে ইহার শীত
গাঁদার পাতার দোদুল দোলায়
কে যেন গায় গীত ।
ঘরে ঘরে গাছে গাছে শীতের সমারোহ,
দারোয়ান জী শীত কাতাতে,
গাইছে রামা হো ।
নতুন শীতের নতুন সাজে উতলা হয় প্রান!
এই রুপসী শীত কে জানাই সাদর সম্ভাষণ ।
সাগরিকা
দীঘার সৈকতে বসে ভাবি আনমনে,
সাগর জল কেলি করে চলে কার সনে ?
সে কি রুপকথার সাগর কন্যা?
যার ঝিনুক বেষ্টিত কটি তে ছুঁয়েছে লীলায়িত কুন্তল?
সারা দিন করে চলে জলছল চলছল!
কোন সেই অদৃশ্য স্বপনপুরি?
কে সেই রাজকুমারি ?
সে কি সাগর সহায়িকা?
নাম টি যে তার সাগরিকা !
আমার টিয়ে
শোনরে আমার টিয়ে ,
সারা জীবন সঙ্গে আমার
রাখবো তোকে নিয়ে ।
সবচেয়ে বড় বন্ধু যে তুই,
তোর কাছে তে সর্বদা রই ।
তোর যে আছে নামের বহর,
তাই দিয়ে হয় একটা শহর-
ভকু,মিস্টু,মিত্রাদি,
দুষ্টু , সোনা ইত্যাদি।
দুষ্টুমিতে ষোলোআনা
কামড় দিতেও মন বাধে না!
এই রকমের মিষ্টি টিয়া আর তো দেখিনি,
এই রকমের ভালবাসাও দিতে পারিনি !
Comments
Post a Comment