সুচিত্রাঞ্জলি - কথিকা ( সুচিত্রা সেন স্মরনে)



বিশ্ব জয়ের চিত্রা তুমি , তুমি যে সুচিত্রা
চিত্র মাঝেই তোমায় খুঁজি , তুমি যে বিচিত্রা
সব চিত্রেই বিরাজ করো তুমি বিরাজ ময়ী
অভিনয়ের যাদুর ছটায় তুমি সর্ব জয়ী ।
তাই তো তোমায় বারে বারে প্রণাম জানিয়ে যাই
তোমার মতন ক্ষমতা যেন আমিও খুঁজে পাই।


কোন অনন্য সাধারন ব্যাক্তিত্বের তুমি প্রতিনিধি ?
কেউ বলতে পারে না এই শিল্পী ব্যাক্তিত্বের " শেষ কোথায়" !
" ভগবান শ্রী কৃষ্ণ চৈতন্য " দর্শনে ভক্তের চোখে নামে শ্রাবনের ধারা ,
প্রকৃতি মায়ের রূপ ধরে বিষ্ণুপ্রিয়া পৃথিবীর গায়ে টেনে দেয় সান্ধ্য আচল,
তখনি আসে " শ্রাবন সন্ধ্যা " ।

পুনরায় দিনকে ফিরিয়ে আনতে , সূর্যের শেষ আভা টুকু সাক্ষী থেকে যায় ,
পৃথিবী সূর্য কে বলে ,এই আভাটুকুই " আলো আমার আলো "।
সূর্য যতই অস্ত যাক,
কোন দিন ই শেষ হয়না পৃথিবী সূর্যের এই " চাওয়া পাওয়া " ।

দিবানাথ কে প্রদক্ষিন কারী পৃথিবী সাত যুগ পরে হয় "সপ্তপদী",
আমার কথায় " সাত পাকে বাঁধা ",
সকলের চোখে লাগিয়ে ধাঁধা !

অদৃশ্য বাজিকর তার খেলা দেখিয়েই চলে,
ভালোই লাগে দীঘির কমল গুলো " কমল লতা " হোলে ,
কোন শিল্পীর তুলির টানে আসে " শুভরাত্রি ",
আঁধার কাটিয়ে ওঠে নতুন সূর্য , জন্মায় " নবরাগ "।
শঙ্খের ধ্বনি মুখরিত করে তোলে " অন্নপূর্ণার মন্দির ",
জগতের সমস্ত "শাপ মোচন " হয়ে যায় ।
" বিপাশা " নদী যেন ধুয়ে দেয় সব অভিশাপ ,
সাগরের দেবী " সাগরিকা " ভুলিয়ে দেয় যত পুন্যপাপ ।


স্মৃতি হীন মানুষের মনের কোনে জমে ওঠে " হারানো সুর " ,
নতুন কোন দিনে হয়তো কারো বাড়িতে আজ " গৃহ প্রবেশ ",
অন্য কারও হয়তো " গৃহ দাহ ",
প্রসিদ্ধ নগর বলতে প্রথমেই মনে আসে কলকাতা ,
সকল বাসভবন ই যেন আকাশ ছোঁয়া কোন " সূর্য তোরণ " ।
কোথাও জ্বলে " সাঁঝের প্রদীপ " , কোথাও বা জ্বলে না !


পূর্ণিমার আলোয় চাঁদের হাট বসিয়েছেন " চন্দ্রনাথ ",
ঘুম ঘুম চাঁদ ঝিকিমিকি তারা দেখে হয়তো বা আকুল হন " ইন্দ্রানী" ।
সবাকার জীবনেই তো আসে নানা " অগ্নি পরীক্ষা " ,
সেই কঠোর পরীক্ষা তে " সবার উপরে " এক জন ই হন ।


পথে যেতে চোখে পড়ে " হসপিটাল ",
সেখানে সেবিকারা যেনও মুখ ফুটে বলতে চায় -আমরা শুধুই সবার জীবনে " দ্বীপ জেলে যাই " ।
ডাক হর করারা চিঠি বিলি করে,
তার ই মধ্যে হয়তো বা কোথাও লেখা আছে " সাড়ে চুয়াত্তর " ,
বিচিত্র এই পৃথিবী তে কেন চলে রকমারি খেলা ?
এ প্রশ্নের নেই কোন উত্তর ।
সবই তো " সদানন্দের মেলা " ।


হয়তো কারোর জীবনে হঠাৎ " মেঘ কালো " হয়ে এলো ,
হয়তো পথে হঠাৎ এলো  "আঁধি ",
পথ চলতে " পথে হোল দেরী ",
 কিন্তু কেবল ই মনে হয় সমস্ত ফেলে সুখের ঘর বাঁধি ।
যে যতই মৃত্যু কে বরন করুক ,
কেউ ই ভোলে না তার আপন জন কে ,
ভুল তে পারে না পৃথিবী মায়ের " মমতা "।


বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ ,
শরতে আসে দুর্গা পুজার ঝলক,
" ঢুলি " ভায়া বাজায় ঢোলক ।
ফাল্গুনের দোলযাত্রায় আমি আকাশে দেখি যেনও " উত্তর ফাল্গুনি " ।
বুঝতে পারি এই নক্ষত্র টি স্বতন্ত্র ,
নিজস্ব জগত তাকে এনে দিয়েছে স্বাতন্ত্র্য ।


দীপাবলি তে বাড়ি ঘরে ছেয়ে যায় " সন্ধ্যা দীপের শিখা " ,
বহুদুর থেকেও যায় দেখা ।
সব ই যেন ভারতলক্ষী রমার আঁচলে ঢাকা !
এরপর আসে শিবরাত্রি,
নিবেদনেই কেটে যায় " ত্রিযামা " ,
যখন ধরনী পরে আঁধারের সুরমা ।


খ্রিষ্টান দের বড় উৎসব প্রভু যীশুর জন্মদিন ,
" প্রিয় বান্ধবী" র হাত ধরি ,
আমরা তা পালন করি ।
কিন্তু গির্জার সামনে প্রভু কে ডাকে ক জন ?
যাকে দেখেছি তিনি অনন্য সাধারন ।


বাঙালির উৎসব ক্ষেত্রে দেখি " কাজরী " ,
আশ্বিনে হয় লক্ষী পুজা, থাকে " একটি রাত " ,
কিন্তু , তার রেশ থাকে দিন সাত ।


মোরাম বিছানো কোন বাগানে ছড়িয়ে আছে হাজার " চম্পাকলি ",
হাজার রকম পাখি, হাজার গাছের সমারোহ ,
কিন্তু এই বাগানের প্রাণ কে আবিস্কার করা বড়ই দুরূহ !
কিছু মানুষের এটি স্বপ্ন জগত ,
তবু এ মহী তে আছেন অনেক " বোম্বাই কা বাবু ",
তারা চেনেন শুধুই " সরহদ " আর " প্রনয় পাশা "!
পৃথিবীর সব মানুষ ই নয় " দেবদাস " ,
 তাও ভগবান কাউ কে করেন না নিরাশ ,
যিনি মানবীদেবী , তিনি সকলকে নেন ডেকে ,
ঠাই হয় তার নন্দন কাননে ,
ফুল পল্লবে , গীত গন্ধে , সুন্দর বরনে !


আমাদের জীবন জুড়ে পাতা শুধু " চতুরঙ্গ " ছক ,
এ বড় কঠিন খেলা ।
নির্দোষ মানুষের বিরুদ্ধে অনেক সময় ই তোলা হয় " ফরিয়াদ " ।
কেউ বা হয়তো হন জেলের " সাত নম্বর কয়েদী " ।
কিন্তু জয়ের জন্য পরাজয় সর্বদা ই " হার মানা হার " ,
জীবনের নানা দিক ঝেলে , কেউ বা হন সপ্তসিন্ধু পার ।
পৃথিবীর মহা মানবী , ধরনীর মহা লক্ষী,
মহানগরী কলকাতার সাথে মিশে আছে " আমার বউ ", "সাজঘর" , " মেজবউ " ।


ভারত কে সমৃদ্ধ করেছে, বঙ্কিমচন্দ্রের " দেবী চৌধুরানী ",
আমরা বিপদ মুক্ত হয়েছি শুনে মহা মানবের অভয় বাণী ।
কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র রচনা করেছেন কতো উপন্যাস-
" রাজলক্ষী ও শ্রীকান্ত " , " দত্তা " ,
যা গড়ে তুলেছে বাংলার নিজস্ব সত্তা ।


মহানগরীর বুকেই আছে অরণ্যের ছায়া,
যার নেই তুলনা , কিন্তু আছে বিভাজন-
"ওরা থাকে ওধারে " ।
জানি সকলেই স্বর্গত হবেন " মরনের পরে " ,
কিন্তু অন্তত " স্মৃতি টুকু থাক " ।


নতুন কিছু জানবে মানুষ ,
শিখবে অন্যায়ের প্রতিবাদ-
তাই তো " জীবন তৃষ্ণা " জীবনের আশ্বাস।
ধ্বংস হবে মারনাস্ত্র " অ্যাটম বোম " ,
একটি মাধবী থাকবে ফুটে মানুষের মনে,
সৌন্দর্যে ভরে উঠবে পৃথিবী,
পুলকেতে করবে রমরম ।


রচিত -১৯৯৫ সাল
আমার ছেলেবেলার একটি রচনা । 
সুচিত্রা সেন অভিনীত চলচ্চিত্রের নাম অবলম্বনে।



Comments

Popular posts from this blog

ONCE IN A SUNNY MORNING(Poem)

DEATH OF BHOKU- My Pet Parrot

A Memorable Marriage